গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে জানার ঘরোয়া উপায়, গর্ভপরীক্ষা করার নিয়ম।

আমার ইশতিহার:

গর্ভস্থ সন্তান ছেলে না মেয়ে সম্পর্কে ধারণা:
গর্ভস্থ সন্তান ছেলে না মেয়ে এ বিষয়টি জানার জন্য স্বয়ং গর্ভবতী থেকে নিয়ে গর্ভস্থ সন্তানের দাদা-নানা সকলই প্রবল আগ্রহী থাকেন। তাই সন্তান পেটে থাকাবস্হায়ই সন্তানের লিঙ্গ জানার জন্য অনেকেই বিভিন্ন উপায় খুঁজে থাকেন। যেন ব্যকুল মনকে একটু সান্ত্বনা দেয়া যায়। সেজন্যে এই আধুনিক যুগে অনেকেই আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভ পরীক্ষা বা গর্ভস্থ সন্তান ছেলে না মেয়ে জানার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেসব পরীক্ষায় অর্থ অপচয় হয়, সময় ব্যয় হয়। কিন্তু আজ আমি আপনাদেরকে এমন কিছু উপায় বলে দেব যেগুলো প্রয়োগ করলে আমি ঘরে বসে খুব সহজে আপনার গর্ভের সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে তা জেনে নিতে পারবেন।

সুপ্রিয় পাঠক, অনেকে ছেলে সন্তান লাভ করার জন্য অধির আগ্রহী থাকে। আবার কিছু লােক মেয়ের প্রতি বেশি আগ্রহী থাকে। আবার অনেকে ছেলে সন্তান কামনা ছিল, কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাকে দান করেন মেয়ে সন্তান। এতে সে মনে মনে রাগ করে থাকে। যা তার জন্য খুবই বােকামীর কাজ। আল্লাহ্ তাআলাই ভালাে জানেন যে, কাকে ছেলে দিলে ভালাে হবে আর কাকে মেয়ে দিলে ভালাে হবে। ছেলে মেয়ে যাই হােক না কেন এদের রিয়কের দায়িত্ব আল্লাহর যিম্মায়। যাহােক নিম্নে এরূপ কিছু আলােচনা উল্লেখ করা হল। তবে একটি বিষয় সব সময় মনে রাখতে হবে যে, বৈজ্ঞানিকদের এসব আলােচনা কিন্তু শতভাগ সত্য নয়। বরং অনেক সময় তাদের কথা মিলে যায়, আবার অনেক সময় তাদের কথার সাথে কাজে মিল পাওয়া যায় না। আবার তাদের আলােচনাকে একেবারে ভ্রান্ত বলে ধারণা করাও ঠিক হবে না। আল্লাহর কুদরতের মহিমা বুঝা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয।

গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে চেনার বিশেষ উপায়:
গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা চেনার অনেকগুলাে উপায় রয়েছে।

১। উকুন ও গর্ভবতীর দুধ:
গর্ভবতী মহিলার কয়েকফোটা দুধ একটি উকুনের উপর ঢেলে দিবে। যদি ঐ উকুন দুধের মাঝখান থেকে বের হয়ে আসে, তাহলে তা মেয়ে সন্তানের গর্ভ। আর যদি উকুন দুধ হতে বের হতে না পারে, তাহলে তা ছেলে সন্তানের গর্ভ ।

২। প্রসিদ্ব হাকিমগণ স্ত্রী লোকের গর্ভের লক্ষণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, গর্ভে মেয়ে সন্তান থাকলে
•সে নারীর চেহারা পরিষ্কার হয়।
•স্তনদয় মোটা হয়।
•স্তনের ডান বামে লাল রেখা দেখা দেয়।
•স্তনের বোটার রঙ কালো বর্ণের হয়।
• বেশি বেশি ভালাে খাবার খেতে ইচ্ছা জাগে।
• চলার সময় ডানদিকের পা আগে ফেলে।
•বসার সময় ডান হাতে ঠেস দিয়ে বসে।
•প্রথমে বাম চোখের পলক দেয়।
•চার মাস পড়েই সন্তান পেটে নড়াচড়া করতে থাকে।

আর যদি গর্ভে ছেলে সন্তান থাকে, তাহলে অবস্থা এর বিপরীত হবে।
•ভালাে খাবার খেতে ইচ্ছা করে না।
•শরীর দুর্বল ও অবশ হয়ে আসে।
•মনে কোনাে প্রকার আনন্দ ফুর্তি থাকে না।
•ভালোভাবে সাংসারিক কাজকর্ম করতে পারে না।
• ক্রমেই চেহারা বিকৃত হয়ে যায়।
•স্তনের বােটার রং লাল বর্ণ ধারণ করে।
•পাঁচ মাস থেকেই গর্ভের সন্তান নড়াচড়া করতে থাকে। এটা বিশেষভাবে পরীক্ষিত একটি পদ্বতি।

৩। লবণ ও প্রস্রাব দিয়ে ভ্রুণের লিঙ্গ পরীক্ষা।
ভ্রূণের লিঙ্গ জানার ক্ষেত্রে সফল পরীক্ষাগুলির মধ্যে এটি একটি। এই পদ্ধতিটি সাধারণত গর্ভাবস্থার অষ্টম সপ্তাহের শুরু থেকে ব্যবহার করতে হয়।

পরীক্ষার পদ্ধতিটি নিম্নরূপ:
•একটি স্বচ্ছ প্লাস্টিকের কাপ নিন।

•কাপে এক চা চামচ লবণ নিন।

•তারপর গর্ভবতীর অর্ধকাপ প্রস্রাব নিন (ঘুম থেকে উঠার পর সকালের প্রথম প্রস্রাব হতে হবে)।

•তারপর চার-পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন, এবং রঙ পরিবর্তন বা অশান্ত অবস্থা লক্ষ্য করুন।

যদি কাপের উপরিভাগে বুদবুদ ভুড়ভুড়ের একটি লেয়ার তৈরি হয়, তাহলে আপনার গর্ভে ছেলে সন্তান রয়েছে।

আর যদি কাপের প্রস্রাবে কোনো পরিবর্তন না আসে, তাহলে আপনার গর্ভে কন্যা সন্তান রয়েছে।

৪। সোডিয়াম বাইকার্বোনেট দিয়ে গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে জেনে নিন।
বেকিং সোডা ও প্রস্রাব দিয়ে দিয়েও গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ জানা যেতে পারে!

যে নিয়মে করবেন
• সকালের প্রথম প্রস্রাব পরিষ্কার পাত্রে সংগ্রহ করুন।
• প্রস্রাবের সমপরিমাণ বেকিং সোডা মিশান।
• প্রস্রাবে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় নাকি একই থাকে তা দেখার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।
• প্রস্রাবে বেকিং সোডা মিশানো হলে দুটি জিনিসের মধ্যে একটি ঘটবে, হয় প্রস্রাবে প্রতিক্রিয়া হবে অথবা স্বাভাবিক থাকবে।
• যদি দেখা যায় প্রস্রাবে কোনপ্রকার পরিবর্তন এসেছে যেমন বুদবুদ ভুড়ভুড় করছে তাহলে ছেলে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
• আর যদি প্রস্রাবে কোনোপ্রকার প্রতিক্রিয়া বা পরিবর্তন না আসে তাহলে মেয়ে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৫। লবণাক্ত খাবার,
গর্ভাবস্থার প্রথম মাস থেকে ভ্রূণের লিঙ্গ জানার সবচেয়ে সহজ উপায়। দাদী নানীদের মাঝে প্রসিদ্ধ একটা নিয়ম রয়েছে যে, যদি গর্ভবতীর গর্ভস্থ সন্তান ছেলে হয়ে থাকে তাহলে গর্ভবতী মহিলার লবণাক্ত খাবার, বিশেষ করে লেবু খাওয়ার প্রতি বিশেষ আগ্রহ থাকে। আর যদি গর্ভবতী মহিলা চিনিযুক্ত খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে তাহলে গর্ভস্থ সন্তান মেয়ে হতে পারে।

৬। সকালে ভীষণ অসুস্থতা
সকালের অসুস্থতা একটি মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। অনেকেই মনে করেন যে সকালের অসুস্থতা একটি মেয়ের লক্ষণ, বিশেষত সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে গর্ভাবস্থায় অসুস্থ বোধ করা গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গের সাথে সম্পর্কিত।

৭। স্তনের আকার
যদি আপনার গর্ভবতী অবস্থায় আপনার বাম স্তন আপনার ডান থেকে বড় হয়, তাহলে মনে হয় আপনার একটি মেয়ে হবে, এবং যদি আপনার ডান স্তন বড় হয়, তাহলে আপনার একটি ছেলে হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।

যৌনমিলন থেকে গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গ ধারণাঃ

৮। যদি সহবাসের সময় স্বামীর তুলনায় স্ত্রীর উত্তেজনা অধিক হয় এবং দৈহিক শক্তিও স্বামী অপেক্ষা বেশী হয়, তাহলে সে স্থলে কন্যা সন্তান হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।

৯। আর যদি সহবাসের সময় স্বামীর তুলনায় স্ত্রীর উত্তেজনা কম হয় এবং দৈহিক শক্তিও স্বামী অপেক্ষা স্ত্রীর কম হয়, তাহলে সে স্থলে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভবনা অধিক থাকে।

১০। অনেকে ধারণা করেন যে, পুরুষের ডান দিকের শুক্রাশয় বা অণ্ডকোষ হতে বীর্যক্ষরণ হলে পুত্র সন্তান জন্ম হয়ে থাকে। তদ্রুপ স্ত্রীলােকের ডান দিকের ডিম্বকোষ হতে ডিম্ব পুরুষের শুক্রকীটের সাথে সংমিশ্রিত হলে পুত্র সন্তান হয়ে থাকে।

১১। আর বাম দিকের শুক্রাশয় হতে বীর্যক্ষরণ হলে কন্যা সন্তান জন্ম হয়ে থাকে। আবার বাম দিকের ডিম্বকোষ হতে ডিম্ব মিশ্রিত হলে কন্যা সন্তান জন্ম হয়ে থাকে।

১২। কারাে কারাে বক্তব্য হলাে, গর্ভ সঞ্চারের সময় পুরুষের বীর্য বেশী হলে পর পুত্র সন্তান লাভ হয়।

১৩। আর সহবাসের সময় স্বামীর শুক্রস্থলনের সময় যদি নাকের ডানদিকের ছিদ্র দ্বারা নিঃশ্বাস বহে, তবে পুত্র সন্তান লাভ করে।

১৪। আর বীর্যস্খলনের সময় যদি নাকের বাম ছিদ্র দিয়ে নিঃশ্বাস বহে, তবে কন্যা সন্তান জন্ম হয়।

১৫। কোনাে যৌনবিদ মত পােষণ করে থাকেন যে, স্বামী ডান কাতে শুইয়ে সহবাস করলে ফল হয় পুত্র সন্তান,

১৬। আর বাম কাতে শুয়ে সহবাস করলে কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে।

১৭। কোনাে কোনাে যৌন বিজ্ঞানীর মতে, গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের হালকা লঘুপাক খাদ্য আহার করলে পুত্র সন্তান জন্ম হয়ে থাকে। যেমন শাক – শবজি ও ফল ফলাদি ইত্যাদি খাদ্য।

বি,দ্র, উল্লেখিত ছেলে বা মেয়ে সন্তান লাভের লক্ষ্যে উপরোক্ত নির্দিষ্ট উপায়ে সহবাস করলেও সফল হতে পারেন।

•গর্ভের বাচ্চার জ্ঞানতাে শুধুই আল্লাহর আছে। মানুষ তার অনুমান করতে পারে মাত্র। বিশ্বাসযােগ্য বলে এতে কিছু নেই।

• অনেক অর্থ- সম্পদের অধিকারীরা আল্লাহর রহমতকে অস্বীকার করে। মূল্যায়ন না করে ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করে দেখে যে, ছেলে কি না মেয়ে। যদি। মেয়ে সন্তান হয়ে থাকে, তাহলে গর্ভ নষ্ট করে দেয়। কিছু নাফরমান, বেঈমান ডাক্তারও নিজের অর্থের লােভে গর্ভের বাচ্চা মেয়ে বলে মিথ্যা স্বীকারােক্তি দেয়, যাতে তার কিছু টাকা পয়সা উপার্জন হয়।

এক্ষেত্রে সকলকে স্মরণ রাখতে হবে যে, একশ বিশদিন অথবা তার থেকে বেশি দিনের বাচ্চা নষ্ট করার অর্থ কোনাে জীবিত মানুষকে হত্যা করার গুনাহ।

হ্যা যদি এ সময়ের কম বাচ্চার গর্ভপাত করার আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায় বা গর্ভবতী হওয়ার পর জীবনের ভয় হয় বলে ধার্মিক অভিজ্ঞ ডাক্তারদের রিপাের্ট পাওয়া যায়, তাহলে আবশ্যক প্রয়ােজনীয় মুহূর্তে মুফতী সাহেবদের পরামর্শে গর্ভপাত করা যাবে।

সর্বশেষ কথা হল, একটু ধৈর্য ধরুন। কয়েকবছর নয় মাত্র কয়েকমাস পার হলেই আপনার কলিজার টুকরো সোনামনিকে দেখতে পাবেন। সে ছেলে হোক বা মেয়ে হোক আসল কথা হচ্ছে সে আপনারই একটা অংশ। আপনার রক্তমাংস থেকেই সে অস্তিত্বে এসেছে। অতএব, আপনার অবিচ্ছেদ্য অংশ পেয়ে অখুশি হওয়া বোকামি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *