আজকের পোস্ট থেকে জানতে পারবেন উপমহাদেশের পাঁচজন বিখ্যাত মনিষীর জীবনী। তাঁরা হচ্ছেন—মাহমুদ হাসান দেওবন্দীর জীবনী। হাকীমুল উম্মত আল্লামা আশ্রাফ আলী থানভী রহ: এর জীবনী। মুফতী শফী রহঃ এর জীবনী। রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী রহঃ এর জীবনী। শাহ ওয়ালি উল্লাহ রহ: এর জীবনী।
১. শাইখুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দি রহ:।
পূর্ণ নাম: মাহমুদ হাসান ইবন যুলফি আলী ইবনে ফতহে আলী। আরব ও আনারবের শায়খ। উর্দু ভাষায় কুরআনে কারীমের প্রথম অনুবাদক। যে গ্রন্থের সুখ্যাতি পৃথিবীর দিক দিগন্তে ছড়িয়ে রয়েছে।
জন্ম: শাইখুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান রহ: ১২৬৮ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দারুল উলূম দেওবন্দের প্রথম ছাত্র। তিনি মুহাম্মদ কাসেম নানুতবী রহ. এর দীর্ঘ সাহচর্য অবলম্বন করেছিলেন। তিনি তার কাছে সিহাহ সিত্তাসহ অন্যান্য কিতাবাদি অধ্যয়ন করেন। তিনি কাসেম নানুতুবী রহ.-এর কাছে থেকে তরিকতের জ্ঞান অর্জন করে ইজাযতপ্রাপ্ত হন। এমনিভাবে তিনি শাইখুল আরব ওয়াল আজম হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী, আল হিন্দি রহ: এর কাছ থেকেও বাইয়াত গ্রহণ করেন । ১২৯০ হিজরীতে তাকমিল (স্নাতক) ডিগ্রী অর্জন করে দারুল উলুম দেওবন্দেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। একপর্যায়ে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের শাইখুল হাদীস পদে সমাসীন হন। অন্যান্য হাদীসের কিতাব ছাড়াও ১২৭৫ হিজরী পর্যন্ত বুখারী শরীফের দরস দিতে থাকেন। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের সার্বক্ষণিক উচ্ছ্বসিত ইলমের সমুদ্র ছিলেন। প্রায় চল্লিশ বছরের কাছাকাছি সময় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত ছাত্ররা তার কাছ থেকে ইলমের তৃষ্ণা নিবরণ করে পরিতৃপ্ত হয়েছিল। ১৩৩৩ হিজরিতে শাইখুল হিন্দ দ্বিতীয় বার হজ্বের সফর করেন। সেই সফরেই তাকে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের কারণে গ্রেফতার করা হয়।
মৃত্যু: মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী রহ: ১৩৩৯ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
রচনাবলী : তিনি অপূর্ব ও অমূল্য বহু গ্রন্থ রচনা করেন। এ সব গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- (১) তরজমাতুল কুরআনুল কারীম (২) শরহে তারাজিমে আবওয়াবে সহীহিল বুখারী। (৩) আল আদিল্লাতুল কামিলা। (৪) ইয়াহুল আদিল্লাহ। এ দুই কিতাবে তিনি হানাফিদের উপর দোষারোপকারীদেরকে রদ করেছেন। সঙ্গে তিনি গ্রামাঞ্চলে জুমার নামায সংক্রান্ত মাসয়ালাকে হানাফি মাযহাবের আলোকে সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণ করেছেন। সুনানে আবী দাউদ এর নুসখাকে বিশুদ্ধ করেছেন।
শিষ্যগণ : তিনি বহু শিষ্য তৈরি করে যান। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন: আল্লামা আনোয়ার শাহ আল কাশ্মিরী রহ., হাকীমুল উম্মত আল ইমাম আত থানভী রহ., শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ.।
২.আশরাফ আলী থানবী রহ:
পূর্ণ নাম: আশরাফ আলী ইবনে আব্দুল হক আল হানাফী। যিনি সর্বশ্রেণীর মানুষের কাছে হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত উপাধিতে পরিচিত ছিলেন। আল ইমাম, আল আরেফ ও বিশিষ্ট ফকীহ।
জন্ম: তিনি ১২৮০ হিজরিতে হিন্দুস্তানের মুজাফফ্ফর নগর শহরের অন্তর্গত থানাভবন নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কুরআনে কারীমের হেফজ করেন এবং প্রাথমিক জ্ঞান দক্ষ উস্তাদদের কাছে থেকে অর্জন করেন। প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করার পর উচ্চ শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্য ১৫ বছর বয়সে দারুল উলুম দেওবন্দ গমন করেন। সেখানে তিনি শাইখুল হিন্দ আল ইমাম, আল মুজাহিদ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী রহ., মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াকুব নানুতবী রহ., দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা ও দার্শনিক মাওলানা কাসেম নানুতবী রহ. প্রমুখ থেকে ইলমেদীন অর্জন করেন। ১৩০০ হিজরিতে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে তাকমিল (স্নাতক) ডিগ্রী অর্জন করেন। অতপর তিনি কানপুরে একটি মাদরাসায় একাধারে ১৪ বছর শিক্ষকতা করেন। অতপর তিনি নিজ শহর থানাভবনে চলে আসেন। এখানে তিনি তার শায়খ আরেফ হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহ. এর খানকায় থাকাকে আবশ্যক করে নেন। উক্ত খানকাতে আখলাক সংশোধন করা ও ইলম অন্বেষণের তীব্র পিপাসা নিবারণ করার কাজে মৃত্যু পর্যন্ত মগ্ন থাকেন।
মৃত্যু : আশ্রাফ আলী থানভী রহ ১৩৬২ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। আজ থেকে প্রায় ৮০ বছর পূর্বে দুনিয়া ত্যাগ করেন।
রচনাবলী : গ্রন্থ রচনা ও ওয়াজ নসীহতের ক্ষেত্রে তিনি খোদাপ্রদত্ত ভৌফিকপ্রাপ্ত ছিলেন। আশ্রাফ আলী থানভী রহ: তাহকীককৃত ছোট বড় প্রায় (১০০০) এক হাজারের মতো গ্রন্থ রচনা করে যান। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হলো, যেমন-উর্দু ভাষায় কুরআনে কারীমের তাফসীর “বয়ানুল কোরআন” যা কুরআনে কারীম বুঝার ক্ষেত্রে ভারতীয় উপমহাদেশের ওলামায়ে কেরামের আশ্রয়স্থল। তার মাওয়ায়েজ তথা বক্তব্যমালা সংকলিত আকারে প্রকাশ পেয়েছে যা ৩০ ভলিয়ম হয়েছে। মানুষে অন্তররাজ্যে আমলের ঝড় তোলার জন্য এ বক্তব্যমালার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তার তাহকিককৃত ফতোয়াসমূহের সংকলন ইমদাদুল ফাতাওয়া নামে প্রকাশিত। ভারতবর্ষে তিনি ফতোয়ার ক্ষেত্রে আলেম ওলামাদের ভরসাস্থল ছিলেন। এছাড়া দীনের প্রত্যেক বিষয়ে তার অনেক গ্রন্থ রয়েছে।
৩. আল্লামা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহ: এর পূর্ণ নাম: মুহাম্মাদ শফী ইবনে মুহাম্মদ ইয়াসীন ইবনে খলিফাহ তাহসীন আলী। আল্লামা মুফাচ্ছির, পাকিস্তানের গ্র্যান্ড মুফতী ফকীহ নফস। মারেফুল কুরআনের গ্রন্থকার। যার সুনাম ও সুখ্যাতি পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে।
জন্ম : মুফতী শফি রহ: ১৩১৪ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। ইলম ও মহানুভবতায় সুউচ্চে অবস্থিত এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। এরপর ইলমী পরিবেশে তিনি লালিত পালিত হয়ে দারুল উলূম দেওবন্দের প্রশস্ততায় বড় হয়ে ওঠেন।
শিক্ষাজীবন: মুফতী শফী রহ: তৎকালীন সময়ে দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিভাবান ও মহান ব্যক্তিদের থেকে ইলম অর্জন করেন।
যেমন: মুহাদ্দিসুল আসর আল ইমাম আনোয়ার শাহ আল কাশ্মিরী। মুফতীয়ে আজম আজীজুর রহমান রহ.। শাইখুল
ইসলাম আল্লামা শাব্বীর আহমদ আল উসমানী রহ.। শাইখুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী রহ.-এর দরসে উপস্থিত হয়েছেন।
কর্মজীবন: তিনি ১৩৩৫ হিজরিতে দারুল উলুম থেকে ফারেগ হন। এরপর সেখানে মুদাররিস হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
তিনি নাহু সরফ ও আদব ইত্যাদি বিষয় থেকে শুরু করে সর্বশেষ হাদীস শরীফ পর্যন্ত বিভিন্ন শাস্ত্র শিক্ষাদান করেন। এক পর্যায়ে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের মুফতী পদে অভিষিক্ত হন। তার মাধ্যমে তাহকীককৃত হাজার হাজার ফতোয়া প্রকাশ হয়। হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহ. এর হাতে বায়াত গ্রহণ করে তার থেকে সুলুকের এজাযতপ্রাপ্ত হন। একপর্যায়ে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে অব্যাহতি নিয়ে পাকিস্তান আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। অবশেষে পাকিস্তান স্বাধীন হলে তিনি সেখানে সপরিবারে হিজরত করেন এবং পাকিস্তানের রাজনীতি ও আইন আদালত ইসলামী রূপরেখার ভিত্তিতে প্রণয়নের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। জামেয়া দারুল উলুম করাচি একটি দীনি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। যার ফয়েজের ঝরণা আজো বহমান।
রচনাবলী : মুফতি শফি রহ: বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। এসব গ্রন্থের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো (১) তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন। (২) আহকামুল কুরআন (৩) ইমদাদুল মুফতিয়ীন (8) জাওয়াহিরুল ফিকহ (৫) আহকামুল হজ্জ সংক্ষিপ্ত ও সাবলীল হওয়ার পাশাপাশি এতে সমস্ত প্রয়েজনীয় হুকুম এসে গেছে। (৬) আল
ইওয়াকীত ফী আহকামীল মাওয়াকীত (হজ্জের মীকাতসমূহ ও জেদ্দা থেকে ইহরাম এর বিশ্লেষণ)। (৭) মানহাজুল খাইর
ফিল হচ্ছি আনিল গাইর (অর্থাৎ বদলী হজের বিধানসমূহ)। (৮) মাকামে সাহাবা (সাহাবায়ে কেরামের বিরোধ ও আদর্শ হওয়া সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ আলোচনা এবং সালাফে সালেহীনের কর্মপন্থা)। (৯) ইসলামী জবীহা (জবাই করা পশু সম্পর্কে শরীয়তের বিস্তারিত বিধান, ইহুদী-নাসারাদের জবাই করা পশুর আলোচনা, বিকৃতির খণ্ডন)। (১০) আযায়ে ইনসানী কী পায়ওয়াদকারী। (১২) বীমায়ে জিন্দেগী । (১৩) প্রভিডেন্ট ফান্ড । (১৪) ইসলাম আওর সোস্যালিজম। (১৫) ইসলামী নেজাম। মে ইকতেসাদী ইসলাহাত। মৃত্যু তিনি ১৩৯৬ হিজরীর শাওয়াল মাসের ১১তারিখে ইন্তেকাল করেন।
৪. আল্লামা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী। পূর্ণ নাম: রশিদ আহমদ ইবনে হেদায়েত আহমদ ইবনে কাজি পিয়ার বখশ, আল গাঙ্গুহী।হিন্দুস্তানের একটি এলাকা ‘গাংগুহ’ এর দিকে সম্পৃক্ত করে তাকে গাঙ্গুহী বলা হয়। তার বংশ পরম্পরা জলিলুল কদর সাহাবী আবু আইয়ুব আনসারী রাযি. পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছে। তিনি ছিলেন সমকালীন আবু হানিফা ও ফকীহুন নফস।
জন্ম : আল্লামা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রহ: ১২৪৪ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইলম অর্জন করার উদ্দেশ্যে দিল্লি সফর করেন। সেখানে তিনি আল্লামা ইয়াকুব নানুতুবী রহ. এর পিতা আল্লামা মামলুক আলী থেকে ফেকাহ ও তাফসিরের জ্ঞান অর্জন করেন। শায়খ আহমদ মুজাদ্দেদে আলফেসানী সিরহিন্দি রহ. এর উত্তরসূরী প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা আব্দুল গণী দেহলভী রহ. থেকে হাদিসের জ্ঞান অর্জন করেন। অতপর শাইখুল আরব ওয়াল আজম হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহ এর কাছ থেকে তরিকতের ইলম অর্জন করেন। এক পর্যায়ে তিনি উলুমে জাহেরি ও বাতেনি সম্পর্কে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। ফলে ইলমের পিপাসুরা দূর দূরান্ত থেকে সফর করে তার কাছে এসে ভীড় জমাতো। বোধগম্য, সহজ, সংক্ষিপ্ত ভাষায় হাদীসের জটিল ও কঠিন প্রশ্নাবলির সমাধানের কারণে তার সিহাহে সিত্তার দরসের সুখ্যাতি পৃথিবীর দিগ-দিগন্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। যেমন- সহীহুল বুখারীর উপর তার বক্তব্যের সমষ্টি ‘লামিয়ুদ দুরারী’ নামক গ্রন্থ এবং ‘জামে তিরমিযির’ উপর তার বক্তব্যের সমষ্টি ‘আল কাওকাবুদ দুররী’ নামক গ্রন্থ এর সুস্পষ্ট সাক্ষ্য ও প্রমাণ বহন করে। এমনিভাবে ফেকাহর উপরও তার অসাধারণ দক্ষতা ছিল। যার ফলে তিনি যুগের আবু হানীফা উপাধিতে ভূষিত হন। ফতোয়া ও ফেকহ সম্পর্কে লিখিত তার রচনাবলী এক সাথে ‘তালিফাতু রাশিদীয়্যাহ’ নামে ছাপা হয়েছে। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ দারুল উলুম দেওবন্দের এবং মাজাহেরুল উলুম সাহারানপুরের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
মৃত্যু : আল্লামা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী রহ: ১৩২৩ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। আজ থেকে প্রায় একশো বছর পূর্বে দুনিয়া ত্যাগ করেন।
৫. শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দীসে দেহলভী রহ:
পূর্ণ নাম : আহমাদ ইবনে আব্দুর রহিম ইবনে ওজীহুদ্দীন আল ওমারী, আদ দেহলভী, আল হানাফী, আল ইমাম, আল মুজাদ্দিদ।
জন্ম: ওয়ালীউল্লাহ দেহলভী রহঃ ১১১৪ হিজরীতে হিন্দুস্তানের মুজাফফরনগর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হলেন আল্লামা শায়খ আব্দুর রহিম। তিনি তৎকালীন নেককার বাদশাহ আওরঙ্গজেব আলমগীরের আবেদনে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া সংকলন করার কাজে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি মাত্র বছর বয়সে পবিত্র কুরআন হিফজ সম্পন্ন করেন । অতঃপর তিনি ইলমে দীন শিক্ষা করার কাজে ব্যাপৃত হন। ১৫ বছর বয়সে তিনি সকল ইলম সম্পর্কে পারদর্শিতা অর্জন করেন। প্রচুর বুনিয়াদী কিতাব তিনি পিতার কাছে অধ্যয়ন করেন। অতঃপর তিনি একাধারে ১২ বছর অধ্যাপনার কাজে ব্যস্ত থাকেন। ১১৪৩ হিজরীতে হারামাইন শরিফাইনের যিয়ারতে ধন্য হন। অতঃপর সেখানে তিনি পূর্ণ দুই বছর অবস্থান করেন, এবং বড় বড় ওলামায়ে কেরামের সান্নিধ্য লাভ করেন। সেখানে তিনি শায়খ আবু তাহের মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম আল কুরদী আল মাদানীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। হাদীস শাস্ত্রে তিনি তাঁর থেকে সিহাহ সিত্তা এবং অন্যান্য বিষয়ে সনদ অর্জন করেন। অতঃপর তিনি ভারতে ফিরে আসেন। ভারতে এসে তিনি হাদীস ও অন্যান্য দীনি ইলমের বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন। তৎকালিন ভারতবাসীর কাছে দুনিয়াবী ইলমের গুরুত্ব প্রবল থাকার কারণে দ্বীনি ইলম নিভু নিভু হয়ে গিয়েছিল।
তিনি বহু মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করে গেছেন। এ সবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-(১)حجة الله البالغة(২) الانصاف في بيان اسباب الاختلاف بين المجتهد (৩) المصطفى في شرح الموطأ (৪) شرح تراجم البخاري (৫) الفوز الكبير في اصول التفسير
মৃত্যু : অলিউল্লা মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ: ৬২ বছর বয়সে ১১৭৬ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।