কবীরা গোনাহ বা মহাপাপ বলা হয়: যে সমস্ত গোনাহ কোরআন হাদীস দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত ও যা করলে আখিরাতে মারাত্মক শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
১. শিরক করা, অর্থাৎ ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার সাথে অন্য কাউকে শরীক করা কাবীরা গোনাহ। ২. মা বাবার অবাধ্য হওয়া অর্থাৎ তাদের হক আদায় না করা। ন্যায়সঙ্গত কাজের আদেশ করলে তা এড়িয়ে চলা কাবীরা গোনাহ ৩. আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা অর্থাৎ যে সব আত্মীয়দের সাথে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে তাদের সাথে অসদ্ব্যবহার করা ও তাদের হক নষ্ট করা কাবীরা গোনাহ। ৪. যিনা করা অর্থাৎ বিবাহবহির্ভূত যৌনমিলন করা কাবীরা গোনাহ ৫. সমকামিতা করা কাবীরা গোনাহ ৬. হস্তমৈথুন করা কাবীরা গোনাহ
৭. প্রাণীর সাথে কুকর্ম করা কাবীরা গোনাহ।
৮. আমানতের খেয়ানত করা কাবীরা গোনাহ।
৯.(শরীয়তের শাস্তি ব্যতিত) মানুষ খুন করা কাবীরা গোনাহ। ১০.কারো ব্যপারে মিথ্যা তোহমত বা অপবাদ লাগানো, বিশেষভাবে যিনার অপবাদ লাগানো।
১১. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া কাবীরা গোনাহ।
১২. সাক্ষ্য গোপন করা কাবীরা গোনাহ
১৩. জাদু/ম্যাজিক দ্বারা কারও ক্ষতি করা কবিরা গুনাহ ১৪. জাদু/ম্যাজিক শিক্ষা করা এবং তা শিক্ষা দেয়া কবিরা গুনাহ । ১৫. অঙ্গীকার ভঙ্গ করা, ওয়াদার খেলাফ করা, কথা দিয়ে তা ঠিক না রাখা কবিরা গুনাহ। ১৬. গীবত করা কবিরা গুনাহ। ১৭.স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে, মালিকের বিরুদ্ধে চাকরকে, উস্তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে, সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে অন্যায়ভাবে ক্ষেপিয়ে তোলা বা উস্কে দেয়া। ১৮. নেশা করা কবিরা গুনাহ। ১৯. জুয়া খেলা, লটারি ধরা কবিরা গুনাহ। ২০. সুদ গ্রহণ, সুদ প্রদান, সূদের লেনদেনে সাক্ষদান ও সূদ বিষয়ক লেনদেনের দলীল লেখক হিসেবে থাকা (সুদী ব্যাংকে জব করা কবিরা গুনাহ)।
২১. ঘুষ গ্রহণ ও ঘুষ প্রদান, তবে জালেমের জুলুমের কারণে নিজের প্রাপ্য অধিকার আদায় করার জন্য ঠেকায় পড়ে ঘুষ দিলে তা পাপ নয় কবিরা গুনাহ।
২২. জোরজবরদস্তি করে অপরের স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাৎ করা কবিরা গুনাহ।
২৩. অনাথ, এতীম, নাবালক বা বিধবার মাল গ্রাস করা কবিরা গুনাহ। ২৪. হজ্জযাত্রীদের প্রতি দুর্ব্যবহার করা কবিরা গুনাহ। ২৫. মিথ্যা কসম করা কবিরা গুনাহ। ২৬. গালি দেয়া কবিরা গুনাহ। ২৭.অশ্লীল কথা বলা কবিরা গুনাহ। ২৮. জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা কবিরা গুনাহ। ২৯. ধোকা দেয়া কবিরা গুনাহ। ৩০. অহংকার করা কবিরা গুনাহ।
৩১. চুরি করা কবিরা গুনাহ। ৩২. সন্ত্রাসী, ডাকাতি, লুটতরাজ করা, পকেট মারা, ছিনতাই করা কবিরা গুনাহ। ৩৩. নাচ, গানবাদ্য সিনেমা তৈরী করা ও উপভোগ করা ইত্যাদি কবিরা গুনাহ। ৩৪. স্বামীর অবাধ্য হওয়া , অর্থাৎ স্বামীর হক আদায় না করা কবিরা গুনাহ। ৩৫. অন্যের জায়গা জমীর আইল/সীমানা নষ্ট করা কবিরা গুনাহ। ৩৬. শ্রমিক দিয়ে পূর্ণ কাজ করিয়ে তার পূর্ণ মজুরী না দেয়া কবিরা গুনাহ ৩৭. ওযনে কম দেয়া কাবিরা গুনাহ ৩৮. মালে ভেজাল দেয়া কবিরা গুনাহ ৩৯. ক্রেতাকে ধোকা দেয়া কবিরা গুনাহ ৪০. দাইয়্যূছিয়াত অর্থাৎ , নিজের স্ত্রীকে বা অধীনস্থ কোন নারীকে পর পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেয়া, পর পুরুষের বিছানায় যেতে দেয়া, এসবের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা।
৪১. শুকরিয়া আদায় না করে অকৃতজ্ঞ হওয়া ৪২. জ্যোতিষীর কাছে যাওয়া ৪৩. পুরুষ ব্যক্তি স্বর্ণের আংটি অথবা অলংকার পরিধান করা ৪৫. নারী পোশাক পুরুষ পরা আর পুরুষ পোশাক নারী পরা জন্য পুরুষের এবং পুরুষের জন্য মহিলার পোশাক পরিধান করা ৪৬. কাউকে ধোকা দেয়া ৪৭. পিরিঅড চলাকালীন অবস্থায় সহবাস করা অথবা সন্তান প্রসবের পরবর্তী চল্লিশ দিনের মধ্যে সহবাস করা ৪৮. পায়ুপথে স্ত্রী সহবাস করা। ৪৯. যাকাত প্রদান না করা। ৫০. ইচ্ছাকৃত ওয়াক্তিয়া নামায কাযা করা।
৫১. শরীয়ত সম্মত কারণ ছাড়া জুমুআর নামায ছেড়ে দেয়া। ৫২. বিনা ওজরে রমজানের রোযা ভাঙ্গা। ৫৩. রিয়া তথা লৌকিকতা,মানুষের প্রশংসা লাভের জন্য ইবাদত করা। ৫৪. সংকট চলাকালীন খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করা ৫৫. পায়ুপথে স্ত্রী সহবাস করা কবিরা গুনাহ ৫৬. যাকাত প্রদান না করা কবীরা গোনাহ ৫৭. ইচ্ছাকৃত ওয়াক্তিয়া নামায কাযা করা কবীরা গোনাহ ৫৮. শরীয়ত সম্মত কারণ ছাড়া জুমুআর নামায ছেড়ে দেয়া কবীরা গোনাহ। ৫৯. মদ তৈরী করা বা মদের ব্যবসা করা কাবিরা গোনাহ ৬০. অশ্লীলতা প্রচার প্রসার করা কবীরা গোনাহ।
৬১. মিথ্যা কথা বলা কবিরা গুনাহ ৬২. হারাম খাদ্য ভক্ষণ করা কবিরা গুনাহ ৬৩. রক্তপান করা কবিরা গুনাহ ৬৪. তাকদীরকে দোষারোপ করা কবিরা গোনাহ ৬৫. সন্তান, স্বামী বা কাউকে অভিশাপ দেয়া কবিরা গোনাহ ৬৬. পেশাব থেকে পবিত্র না হওয়া বা মলমূত্র ত্যাগ করে পবিত্র না হওয়া ৬৭. সংকট চলাকালীন খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করা কবীরা গোনাহ ৬৮। প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া কবীরা গোনাহ ৬৯. কর্ম করার শক্তি থাকা সত্বেও ভিক্ষা করা কবীরা গোনাহ ৭০. জোর করে নেতৃত্ব দেয়া কবীরা গোনাহ।
৭১. শারীরিকসুস্থ থাকা সত্বেও স্বামীর সহবাসের আহবানে অসম্মত হওয়া কবীরা গোনাহ ৭২. পরের দোষ খোঁজে বেড়ানো কবীরা গোনাহ। ৭৩. অন্য মুসলামানের ইজ্জত হানি করা কবীরা গোনাহ ৭৪। রাসূল সা. বলেননি অথবা করেননি এমন কাজ রাসূলের সাথে সম্পৃক্ত করা কবীরা গোনাহ ৭৫. হজ ফরয হওয়ার পর ইচ্ছাকৃত হজ্জ না করে মৃত্যু বরণ করা কবীরা গোনাহ ৭৬. পাপ কাজের প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা এবং পাপ কাজে সাহায্য সহযোগিতা করা কবীরা গোনাহ ৭৭। আত্মহত্যা করা কবীরা গোনাহ ৭৮। আলেমে দ্বীনকে অবজ্ঞা- অসম্মান করা কবিরা গুনাহ ৭৯। জালিম শাসকের প্রশংসা করা কবিরা গুনাহ ৮০। অন্যায় কাজ সমর্থন করা কবিরা গুনাহ।
৮১। অন্যায় কাজ দেখে বাধা না দেয়া কবীরা গুনাহ, আর বাধা দেবার সামর্থ্য না থাকলে অন্তরে ঘৃণা পোষণ না করা কবীরা গুণাহ ৮২। স্বেচ্ছায় নিজের কোনো অঙ্গহানি করা কবিরা গুনাহ ৮৩। বিনা প্রয়োজনে গোপনাঙ্গ কাউকে দেখানো ৮৪। বগলের পশম ও নাভির নিচের পশম বিনা কারণে লম্বা করে রাখা কবিরা গুনাহ ৮৫। কোনো প্রাণীকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা কবিরা গুনাহ তবে ভিন্ন উপায় না থাকলে পুড়ানো যাবে ৮৬ সহবাস করে গোসল না করার অভ্যাস করা কবিরা গুনাহ ৮৭। রাষ্ট্রদ্রোহিতা করা কবিরা গুনাহ ৮৮। খতনা না করা কবিরা গুনাহ ৮৯। ন্যায় বিচার না করা কবিরা গুনাহ ৯০।
হাসি-মজা করে কাউকে অপমান করা কবিরা গুনাহ ৯১। ইসলামী আইনের বিরুদ্বাচারণ করা কবিরা গুনাহ ৯২। হালাল প্রাণীকে গাইরুল্লার নামে জবাই করা কবিরা গুনাহ ৯৩। মৃত প্রাণীর মাংস খাওয়া কবিরা গুনাহ ৯৪। আল্লাহর আযাবের ক্ষেত্র নির্ভীক হওয়া কবিরা গুনাহ ৯৫। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া ৯৬। কোনো মুসলমানকে কাফের বলা কবিরা গুনাহ ৯৭। কোনো সাহাবীকে গালিগালাজ করা বা তাঁদের মন্দ সমালোচনা করা ৯৮। শুকুরের মাংস ভক্ষণ করা ৯৯। দান করে খোটা দেওয়া ১০০। গুজব ছড়ানো। এগুলো ছাড়াও কিছু কবীরা গোনাহ রয়েছে যা আমাদের সংগ্রহে নেই।
আসুন আমরা গোনাহে কবীরা থেকে সম্পূর্ণভাবে বেঁচে থাকি। আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে নিজেকে রক্ষা করি। গোনাহের দ্বারা আল্লাহ ও বান্দার মাঝে দুরুত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়। গোনাহগার গোনাহের দ্বারা আল্লাহ এবং রাসূলকে নারাজ-নাখুশ করে। পক্ষান্তরে শয়তানকে খুশি করে। ফলে নিজেকে জান্নাতের পথ থেকে জাহান্নামের পথে পরিচালিত করে। আর এমতাবস্থায় চলতে চলতে জাহান্নামের কঠিন আগুনে থুবড়ে পড়ে। সুতরাং গোনাহের কাজ চাই তা ছোটো হোক বা বড় হোক তা থেকে বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। গোনাহ হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তাওবা করে নিতে হবে।