ইফতা বিভাগের কিতাব-সিলেবাস, আদব বিভাগের কিতাব।
দাওরায়ে হাদীস সমাপ্ত করার পর কওমি ধারায় বিভিন্ন শাস্ত্রের উপর রয়েছে বিষয়ভিত্তিক উচ্চশিক্ষা। যেমন: তাখাসসুস ফিল ইফতা, কিসমুল আদাবিল আরাবী, উলুমুল হাদীস, উচ্চতর ইলমুল কিরাত ও তাজবিদ বিভাগ, তাফসির বিভাগ, কারিগরি বিভাগ, সাহিত্য সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ ইত্যাদি। দাওরায়ে হাদীস সমাপ্ত করার পর অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্যে পছন্দমত শিক্ষা বিভাগ নির্বাচন করে ভর্তি হন। তাই নতুন শিক্ষার্থীদের সহায়তার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় তথা ইফতা বিভাগের কিতাব ও সিলেবাস, আদব বিভাগের কিতাব ও তার লক্ষ্য সম্পর্কে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা করা হবে। পূর্ণ প্রবন্ধটি মনোযোগ দিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।
আলোচ্য বিষয়সমুহ হল-
• ইফতা বিভাগের লক্ষ্য
• ইফতা বিভাগের সিলেবাস
• ইফতা বিভাগের কিতাব
• ফতোয়া কাকে বলে
• মুফতী কাকে বলে
• মুফতি কয় প্রকার
• ফতোয়ার আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ
• ফতোয়ার গুরুত্ব ও মহত্ব
• ফতোয়ার প্রভাব
• আদব বিভাগের লক্ষ্য
• আদব বিভাগের কিতাব।
দাওরায়ে হাদিস ছিল সর্বোচ্চ ক্লাস। দাওরা পাশ করার দ্বারা দীনের গভীর জ্ঞান অর্জিত হয়ে যেত। তাই একজন দাওরা পাশ আলেম শরিয়তের বিভিন্ন বিষয়ে ফতোয়া দেওয়ার যোগ্যতা রাখত। কিন্তু কালক্রমে ইলমের অধঃপতন হওয়ায় দাওরার পরে বিভিন্ন কোর্স চালু করার প্রয়োজন পড়ে। তন্মধ্যে ইফতা বিভাগ হল অন্যতম।
ইফতা বিভাগের লক্ষ্য:
• একজন দক্ষ মুফতির জন্য কিতাব পরিচিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাই ফিকহ, হাদীস, তাফসীর ও বিভিন্ন বিষয়ে নতুন-পুরাতন কিতাব পরিচিতির দরস প্রদানের মাধ্যমে ফিকাহ শাস্ত্রের উপর দক্ষ করে গড়ে তোলা।
• ফিকহের প্রতিটি বাবের উসূল মুখস্ত করিয়ে তার শাখা মাসআলা ও সমসাময়িক মাসআলার সাথে সামঞ্জস্য প্রদানের যোগ্য করে গড়ে তোলা।
•নির্ভুল ফতওয়া প্রদানের যোগ্যতা অর্জন।
•কুরআন ও হাদীস অনুসারে ফারায়েজ তথা জমি জমা বন্টনের প্রেক্টিকেলী অভিজ্ঞতা লাভ করা।
• ইসলামী অর্থনীতি ও পাশ্চাত্ব অর্থনীতি , ব্যাংক, বীমা, শেয়ার বাজার, কোম্পানি, রাষ্টবিজ্ঞান, চিকিৎশাস্ত্রসহ সমসাময়িক মাসায়েলের শরয়ী প্রশিক্ষণ প্রদান।
• আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামাত এর মাতাদর্শের অধিকারী, সত্য ন্যায়ের প্রতিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে বর্তমান প্রচলিত সমস্ত বাতিল ফিরকা ও ভ্রান্ত মতবাদ সম্পর্কে অবগত করন।
• প্রয়োজনীয় ইংরেজী পাঠদান।
• কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ভিত্তিক মুতালাআ ও জিজ্ঞাসিত ফতোয়ার জবাব প্রদানের মৌলিক ধারণা প্রদান।
ইফতা বিভাগের কিতাবের তালিকা:
১. উসূলুল ইফতা (ফিকহের মূলিনীতি বিষয়ক কিতাব)।
২. আদ্দুররুল মুখতার বা ফতোয়ায়ে শামী (ফিকহের উচ্চতর কিতাব)।
৩. আস্ সিরাজী ফিল মিরাস (ফরায়েজ সংক্রান্ত কিতাব)।
৪. আল মাদখাল ফি ফিকহিন আ‘মিন।
৫. আল ফিকহুল ইসলামী (উসূল ভিত্তিক মাসআলার প্রয়োগ বিষয়ক কিতাব)।
৬.বুহুস ফি ক্বাযায়া মু‘আসারাহ (সমসাময়িক মাসআলা বিষয়ক কিতাব)
৭. ফাতোয়ায়ে উসমানী।
৮. ইসলাম আওর জাদীদ মা‘য়িশাত ও তিজারাত।
৯. আধুনিক ক্রয় বিক্রয় সংক্রান্ত মাসআলার কিতাব।
১০. আল ফিরাকুল বাতিলা । ভ্রান্ত মাতবাদ বিষয়ক কিতাব।
১১. আল আশবাহ ওয়ান নাজায়ের।
১২. ফিকহী মাকালাত।
১৩. ইসলাম ও আধুনিক অর্থনীতি এবং ব্যবসায় নীতি।
১৪. তামরীন (ফতোয়া অনুশীলন)।
১৫.কাওয়ায়িদুল ফিকাহ।
(বি:দ্র: দেশের সবগুলো ইফতা বিভাগে একইরকম তথা উপরোক্ত কিতাবগুলোর সব কয়টি পাঠদান হয় না। ছয় থেকে সাতটি কিতাব পড়ানো হয়)।
মুফতি কয় প্রকার?
মুফতি দুই প্রকারের। প্রকৃত মুফতি হল যার ভেতর ইজতিহাদের যোগ্যতা থাকে। দ্বিতীয় প্রকার মুফতি হল নাকেল। ফুকাহায়ে কেরামের কিতাবগুলো থেকে এবং নিকট অতীত ও বর্তমানের মুজতাহিদতুল্য আলেমদের ফতোয়াগুলো জানার পর সাধারণ মানুষকে জানানো হল এই দ্বিতীয় প্রকার মুফতির কাজ। প্রধানত এই দ্বিতীয় প্রকার মুফতি তৈরি করাই ইফতা বিভাগের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে নিম্নের কাজগুলো করা উচিত :
০১. উসুলে ইফতা ও রসমুল মুফতী কিংবা এ জাতীয় কোনো কিতাব দরসে পড়ানো আবশ্যক।
০২. ফিকহ ও ফতোয়ার কিতাবগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া উচিত। চার মাজহাবের বিশেষত নিজে মাজহাবের কিতাবগুলোর রচনা, রচয়িতা, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান দেওয়া জরুরি। অন্তত বর্তমানে ছাপা হয় এমন ফিকহ ও ফতোয়ার কিতাবগুলোর পরিচিতি জানা আবশ্যক।
০৩. যে-কোনে একটি ফতোয়ার কিতাব আদ্যোপান্ত পড়ে শেষ করা উচিত। আমাদের জন্য উর্দু পড়া উচিত। তাই ফতোয়া মাহমুদিয়া নতুনটি আগা-গোড়া মুতালাআ করা যেতে পারে। একজন নেগরান উস্তাদের তত্ত্বাবধানে।
০৪. ফিকহ ও ফতোয়ার কিতাব হতে জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়গুলো প্রাধান্য দিয়ে মুফতাবিহী কওলগুলো জানা দরকার। বিশেষত নিকট অতীত ও বর্তমানের বিজ্ঞ ফকীহদের ফতোয়াগুলো ছাত্রদের অবহিত করা আবশ্যক। ফিকহ একাডেমী জেদ্দা এবং ফিকহ একাডেমী ইন্ডিয়া হতে আধুনিক মাসায়েলের ওপর বিভিন্ন গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। তৎসঙ্গে নামকরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তিদের ফতোয়া সঙ্কলনও পড়া জরুরি। উর্দু ফতোয়ার কিতাবগুলোর বৈশিষ্ট্য জানা এবং কোন কিতাবে কোন বিষয়ের অধিক মাসায়েল পাওয়া যায়, এটাও জেনে রাখা উচিত।
০৫. প্রথম কয়েক মাস প্রতিদিন একটি করে মাসআলা তামরীন করা উচিত। তামরীনের কিছু নিয়ম উস্তাদ বলে দিবেন। ওই নিয়ম মেনে তামরীন করতে হবে। উস্তাদ অত্যন্ত গভীর মনোযোগ দিয়ে তামরীন করাবেন। এরপর প্রতিদিন দুইটি করে মাসআলা তামরীন করাবেন। বিভিন্ন বিষয়ে তামরীন হবে। তামরীন দ্বারা ছাত্র এটা বুঝতে পারবে যে, কোন্ মাসআলা কোন অধ্যায়ে পাওয়া যেতে পারে।
০৬. দরস কম কিন্তু তামরীন ও মোতালাআ বেশি হলে ছাত্রদের বেশি উপকার হবে। বিশেষত যত বেশি জুযইয়াত বা শাখাগত মাসায়েল জানতে পারবে ততোই তার লাভ হবে। কারণ, আমরা দ্বিতীয় প্রকার মুফতি তৈরি করছি। এই মুফতি উসুল দ্বারা ইজতিহাদ করে ফতোয়া দিতে পারবে না। তাই যত বেশি জুযয়ি মাসায়েল সে জানবে ততো বড় মুফতি হতে পারবে সে।
০৭. সিরাজী, আল-আশবাহ, কাওয়ায়েদুল ফিকহ ও দুররে মুখতার– এই কিতাবগুলো দরসে থাকবে। দৈনিক তিন/চারটার বেশি ক্লাস হওয়া উচিত না। বাকি সময় তামরীন ও মোতালাআর জন্য।
০৮. প্রত্যেক ছাত্রের মেজাজ অনুযায়ী যে কোনো একটি বিষয়ে পাণ্ডিত্য অর্জনের চেষ্টা করা উচিত। যেমন ব্যাংকিং, ইবাদত, যাকাত, বেচাকেনা, ফারায়েজ ইত্যাদি যে কোনো একটি বিষয়ে বিশেষ দখল আনার চেষ্টা করা।
০৯. আরবি, বাংলা ও উর্দু ভাষায় দখল থাকলে ইফতা পড়া সহজ। ইংরেজি জানা থাকলেও উপকার হবে। ইফতায় ভর্তি করানোর সময় আরবি ও উর্দু না জানলে ভর্তি করানো উচিত না। যে কোনো আরবি কিতাব পড়ার যোগ্যতা থাকতে হবে এবং ফিকহ ও উসুল সম্পর্কেও ভালো ধারণা থাকা উচিত।
১০. বাংলাদেশের প্রচলিত আইন, সমাজব্যবস্থা ও সংবিধান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া উচিত।
১১. ছয় মাস যাওয়ার পর বিভিন্ন বিষয়ে মুহাজারাত করানো উচিত। বিশেষত ফিরাকে বাতিলা ও আধুনিক মাসায়েল সম্পর্কে।
১২. প্রথম কয়েক মাস উর্দু কিতাব মোতালাআ করানোর পর আরবি ফতোয়ার কিতাব মোতালাআ হবে। কয়েকটি কিতাব সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত মোতাআলা হলেও ফতোয়া শামী বিষয়ে বিস্তারিত জানা উচিত।
ছাত্রদের পরিশ্রম, উস্তাদদের নেগরানির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। এক বা দুই বছরে ইফতা বা ফতোয়া দেওয়া সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান অর্জিত হয়। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন কোনে বিজ্ঞ মুফতি সাহেবের তত্ত্বাবধানে কয়েক বছর সময় অতিবাহিত করা। ইফতা পাশ করার পরও উস্তাদদের কাছে রুজু করা উচিত। হুটহাট ফতোয়া প্রদান হতে বিরত থাকা শ্রেয়।
এ বিষয়গুলো আয়ত্ত করতে হলে দুই বছর ইফতা হওয়া উচিত। দারুল উলুম দেওবন্দ ও সাহারানপুরসহ ভারতের অধিকাংশ জায়গায় একবছরের ইফতা। অবশ্য ভালো ছাত্র পরিশ্রম করলে এক বছরেও ফায়দা হয়।
ফতোয়া কি? মুফতী কাকে বলে?
আমি একজন মুসলমান। আমার রয়েছে একটি স্বতন্ত্র জীবনাদর্শ, রয়েছে নীতি নৈতিকতা। আমার জীবন কস্মিনকালেও নীতি নৈতিকতাহীন যাচ্ছেতাই ভাবে পরিচালিত হতে পারে না। আমাকে অনুসরণ করতে হবে কিছু বিধি , বর্জন করে চলতে হবে কিছু নিষেধ। এ অনুভূতি ও চেতনায় উদ্বেলিত হয়ে এরূপ বিধি -নিষেধ ও নীতি আদর্শের আলােকোজ্জল ধারায় পরিচালিত জীবনের নামই হল ইসলামী জীবন। ইসলামী জীবন যাপনে জীবনের বাঁকে বাঁকে প্রয়ােজনীয় বিধি – বিধান ও নীতিমালার কুরআন – সুন্নাহ তথা শরীয়ত ভিত্তিক বিশ্লেষণের নামই হল।
‘ফাতোয়া’। আর ফাতাওয়া প্রদানের এ দায়িত্বপূর্ণ কাজটি আঞ্জাম দিয়ে যারা দেশ ও জাতিকে ইসলামী জীবনধারা অনুসরণে পথ – প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে থাকেন শরীয়তে তাদের সম্মানিত উপাধি হল— মুফতী। ইসলামী জীবন ধারায় কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন যাপনে ফাতাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। ফাতাওয়া হলাে ইসলামী জীবন পদ্ধতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এ কারণেই ইসলামী বিধি -বিধান তথা সর্বশ্রেষ্ঠ। গ্রহণযােগ্য জীবনাদর্শ ইসলামী শরীয়তের মৌল বিষয়াদি ও শাখা–প্রশাখা নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ ও আলােচনা অত্যন্ত প্রয়ােজনীয় । কারণ, ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলী ছাড়াও সময় ও পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন বিষয়কে শরীয়তের আলােকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করার প্রয়ােজন ক্ষনে ক্ষনে আবশ্যকীয় হয়ে পড়ে। আর সে জন্য দেশের দায়িত্বশীল উলামায়ে কিরাম এ দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে দ্বীন ও শরীয়তকে প্রানবন্ত ও সচল করে রেখেছেন। এর জন্যে বর্তমানে দেশে রয়েছে মুফতী বাের্ড, দারুল ইফতা, ফাতাওয়া বিভাগ ইত্যাদি নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
ফতোয়ার আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থঃ
ফাতাওয়া একটি আরবী শব্দ।ফাতাওয়ার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- কোনো প্রশ্নের জবাব দেয়া। ইসলামি পরিভাষায় : দ্বীনি প্রশ্নের কোরআন সুন্নাহ ভিত্তিক উত্তরকেই ফাতাওয়া বলে আখ্যায়িত করা হয়।
ফতোয়ার গুরুত্ব ও মহত্ত্বঃ
ফাতাওয়া কোন ঠাট্টা-বিদ্রুপের বিষয় নয়।এটা কোনো উর্বর মস্তিষ্কের আবিষ্কার বা কল্পিত গল্প নয়।এটা আল্লাহ প্রদত্ত আইন।এর সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত আছে ইসলামি বোধ-বিশ্বাস, ইতিহাস, ঐতিহ্য।ফাতাওয়া মানে কুরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস, যুগেযুগে ক্ষণে-ক্ষণে যেসব সমস্যার উদ্ভব হয় সেগুলোর শরীয়ত সম্মত মীমাংসার নামই ফাতাওয়া। একজন মানুষকে জন্ম থেকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত দৈনিন্দিন জীবনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সামাজিক জীবন থেকে নিয়ে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবন পর্যন্ত মানুষের সমস্যা অন্তহীন। এসবের আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল নির্দেশিত বিশুদ্ধ ও যথার্থ বিধানই ফাতাওয়া। এই ফাতাওয়া ছাড়া একজন ইমানদার মুহুর্তের জন্যেও বাঁচতে পারে না। ফাতাওয়া ছাড়া আরেকটি জীবন কল্পনা করা যায় সেটা হল চতুষ্পদ জানোয়ারের জীবনের মত।অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য ইসলামের শত্রুরা ও অবুঝ নামধারী মুসলমান তাদের অনুকরণে ফাতাওয়ার মতো কুরআনের এই পবিত্র সম্মানীত শব্দ ও বিষয় নিয়ে ভয়ানক ও আত্মঘাতীক অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে।তারা বুঝেনা, ফাতাওয়ার ইমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর সাথে ইমানের গভীর সংযোগ।
সর্বপ্রথম ফাতাওয়া প্রদানকারী হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। তারপর আল্লাহর পক্ষ হতে ফাতাওয়া প্রদান করেছেন সাইয়্যিদুল আম্বীয়া মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ। তারপর সাহাবায়ে কেরাম। সাহাবায়ে কেরামের মাঝে বিশিষ্ট মুফতি ছিলেন অন্তত ১৩০ জন সাহাবায়ে কেরাম।
কিসমুল আদাবিল আরাবি [উচ্চতর আরবি সাহিত্য]
আদব বিভাগের লক্ষ্যঃ
•নাহু সরফের জটিলতা নিরসন করে কন্ঠস্থ করণ ও বাস্তব প্রয়োগ।
•শুদ্ধরূপে আরবী ভাষায় কথোপকথন ।
•নির্ভুল ও বিশুদ্ধভাবে আরবী কিতাব পড়ার যোগ্যতা অর্জন।
•সুন্দর হস্তলিপি প্রশিক্ষন।
•যে কোন বিষয়ে আরবীতে বক্তৃতা প্রদানে পারদর্শি হওয়া।
•আরবী পত্র-পত্রিকা, চিটি, দরখাস্ত ও প্রবন্ধ পড়তে ও লিখতে পারার যোগ্যতা অর্জন।
•কুরআনুল কারীম বিশুদ্ধভাবে অনুবাদ করতে পারা।
নিম্নে আদব বিভাগের সিলেবাস দেওয়া হল।
১.কাসাসুন নাবীয়্যিন
২.আত ত্বারীকু ইলাল আরাবীয়্যাহ
৩.আন নাহুল মুয়াসসার
৪.কাইফা নাতাআল্লামুল ইনশা
৫. আল ইনশাউল ওয়াযিফি
৬.আল মুআত্তা ফিল আরাবীয়্যাল ওয়াজীফীয়্যাহ
৮.মুখতারাত মিন আদাবিল আরব
৯.আততামরীনুল কিতাবিয়্যী
১০ আল কিরাআতুর রাশিদাহ
১১. আল আরাবীয়্যাহ লিন নাশিয়ীন
১২.কালিলাতুন ওয়াদিফনাতুন।
প্রিয় পাঠক, আশা করি www.amarishtihar.com কর্তৃক রচিত ইফতা বিভাগের কিতাব-সিলেবাস, আদব বিভাগের কিতাব সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন।